প্রিয় পাঠকগণ, আপনাদের অভিবাদন।
আমার সাংবাদিকতা জীবন খোলা বইয়ের মতো আপনাদের সামনে উন্মুক্ত। মানুষের জীবনে ভুল-ত্রুটি থাকে, কর্মজীবনে আমারও হয়তো ভুল-ত্রুটি ছিল। কিন্তু রিপোর্টার থেকে কলামিস্ট হিসেবে উঠে আসার পুরোটা সময় পেশাগত কাজকে আমি ইবাদতের মতো নেওয়ার চেষ্টা করেছি। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বুকে নিয়ে যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে আমার বেড়ে ওঠা। একটি বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র আমার চিন্তা ও চেতনায় লালিতই হয়নি, অস্থিমজ্জায় বসত গেঁড়েছে। স্রোতের বিপরীতে সাঁতার-কাটা মানুষ আমি। পেশাগত জীবনে নানামুখী টানাপোড়েন ও ঝুঁকি মোকাবেলা করেছি ধৈর্য্য, সাহস ও সহনশীলতা নিয়ে। জীবন মানেই যে সংগ্রাম- এই পাঠ আমি নিয়েছি ইতিহাসের পূর্বসুরীদের আদর্শ থেকে।
মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমার আদর্শ। শৈশবে দেখা মুক্তিযুদ্ধ আমার অহংকার। আমার দলের নাম মানুষ। তাই কোনো দলীয় সংকীর্ণতা নয় দেশ ও মানুষের স্বার্থই আমার কাছে বড়। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রাণশক্তি যুগিয়েছেন বার বার। তার ‘সত্য যে কঠিন, কঠিনেরে ভালবাসিলাম’ পংক্তি আমার এগিয়ে চলার মূলমন্ত্র। পেশার তারে জড়ানো জীবনে ভলতেয়ারের হৃদয়-ছোঁয়া উক্তি ‘আমি তোমার মতের সঙ্গে একমত নাও হতে পারি, কিন্তু তোমার মত প্রকাশের স্বাধীনতার জন্য জীবন দিতে পারি’ এই চিন্তা ও চেতনা লালন করে পথ হেঁটেছি। জীবনের উপলব্ধি থেকে কবি নজরুলের বাণী বিশ্বাস করতে শিখেছি ‘বিবেক বেঁচে থাকলে সুখ মরে যায়’।
জীবনের এই কঠিন সময়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, প্রথাগত চাকরি আর নয়। কবি জীবনানন্দ দাশের ভাষায়, “পৃথিবীতে নেই কোনো বিশুদ্ধ চাকুরি”। যত জায়গায় কাজ করেছি, আন্তরিকতা নিয়েই করেছি। সেইসব প্রতিষ্ঠানের প্রতি কৃতজ্ঞ।
কোনো শাসক বা ক্ষমতাবানের করুণাশ্রিত জীবন নয়, পেশাগত জীবনে আত্মমর্যাদার সঙ্গে সুলুকসন্ধানীর মতো চোখ-কান খোলা রেখে সত্যের মুখোমুখি হবার চেষ্টা করেছি। দেশ ও মানুষের স্বার্থের প্রশ্নে আপস করিনি। করপোরেট সংস্কৃতির এই যুগে চাকরি করা যত কঠিন, চাকরি না করে টিকে থাকার সংগ্রাম আরো কঠিন। আমি শেষ চ্যালেঞ্জটি গ্রহণ করেছি।
প্রিয় পাঠকগণ, আমি কখনো সম্পাদক হতে চাইনি। আপনাদের মতো আমিও জানি দলবাজি, সুবিধাবাজি, আর মূল্যবোধের অবক্ষয়ে রক্তাক্ত ক্ষত বিক্ষত আমাদের সমাজে আজ সাংবাদিকতার মতো মহান পেশাও অন্যান্য পেশার বাইরে যেতে পারেনি। সাংবাদিকতা পেশায় আজকাল কেউ তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া, আবুল মনসুর আহমদ, জহুর চৌধুরী, কিংবা নিদেনপক্ষে এবিএম মুসা বা আতাউস সামাদ হতে চান না। সরকারি আনুকুল্য, রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে অনুকম্পা, আনুগত্য, সরকারি পদ পদবি নিতে চান। বরাবর ছোটখাটো সাধারণ মানুষ হয়েও নিজেকে সেই সব পূর্বসুরীদের উত্তরাধিকারীত্ব বহন করার চেষ্টা করেছি যারা এই মহান পেশাকে গৌরবের মর্যাদায় আসীন করেছিলেন। একদম সাধু ফেরেস্তা নই, তবুও অন্তহীন বেদনা, দহন, নানামুখী টানপোড়েন, ঝুঁকির পথকেই বেছে নিতে হয়েছে।
কিছু কিছু মানুষেরা পৃথিবীতে আলো ঝলমলে পরিবেশে আসেন, ভোগ বিলাসের রঙ মাখতে মাখতে তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলে চলে যান। কিছু কিছু মানুষ আসেন, সৃষ্টিশীলতার নেশায়। নতুনত্বের হাতছানিতে অন্তহীন বেদনা ও হাহাকার সয়ে হৃদয় ক্ষয়ে পথ হাঁটেন। লেখক, সাংবাদিক, কবি হন। যেমন আমাদের পূর্বসুরীরা জীবন ক্ষয়ে রাজনীতিবিদি হয়েছিলেন। এই সব মানুষেরা ঘোর অন্ধকার সময়ের মুখোমুখি হয়ে দীর্ঘ সুরঙ্গ কেটে আলোর সন্ধান করেন। আমি তাদের পথটিই গ্রহণ করেছিলাম। দুই দুই বার হৃদযন্ত্র মেরামত করার পরেও আমার স্বাধীনচেতা জাগ্রত বিবেকের ক্রন্দন, আকুলতা, দগ্ধ করেছে জীবনের পরতে পরতে। তাই না পেয়েছি স্বস্তি, না পেয়েছি নিরাপদ নিশ্চিন্ত জীবন। মত ও পথের অমিলের কারণে ৫২ বছরের জীবনের অর্ধেকেরও বেশি সময় পেশাগত জীবনে কাটালেও স্থায়ী ভাবে ঘর বাঁধতে পারিনি কোথাও। দশ বারেরও বেশি চাকরি ছেড়েছি।
জীবনে একবার এই বেলাতে এসে চাকরি খোয়াতে হয়েছে কেন তা অনেকেই জানেন। এর কারণ ব্যাখ্যা করে হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে চাই না। জীবনের মধ্যগগনের সূর্য অতিক্রম করে নিউজ পোর্টাল পূর্বপশ্চিমবিডি ডটকমের চ্যালেঞ্জ নিয়ে পথ হাঁটতে শুরু করেছি আজ। একদল অভিজ্ঞ আত্মমর্যাদা সম্পন্ন সাংবাদিকদের ছায়ায় তৈরি হয়েছে একটি উদ্যমী সংবাদকর্মীর টিম। পূর্বপশ্চিম ক্রিয়েটিভস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনুজ প্রতিম সৈয়দ সারওয়ার রহমান, নিউজ পোর্টালের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক মুহাম্মদ রায়হানুর রহমান পীর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তথ্য প্রযুক্তিতে প্রথম শ্রেণী নিয়ে শিক্ষকতা করেছিলেন। সেটি ছেড়ে তারা তথ্য প্রযুক্তি খাতে নিজেদের মেধা ও মননশীলতাকে বিনিয়োগ করেন। তাদেরকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের এই পূর্বপশ্চিম পরিবার। পূর্বপশ্চিম পরিবারের চৌকস মেধাবী সদস্য এস. জি ফারুক কলিন্সের পরিচালনায় মহিউদ্দিন মারুফ, একে মোহাম্মদ শরিফুল আলম, তানজীর আহমেদ দ্রুত সময়ে অফিস সাজিয়ে দিয়ে অনন্য ভুমিকা রেখেছেন। প্রিন্স ও রায়হান, দিবারাত্রি পরিশ্রম করে ওয়েবপোর্টাল ডিজাইনের কাজ সম্পন্ন করেছেন। পূর্বপশ্চিম বিডি ডটকমের উপদেষ্টা দেশবরেণ্য শিল্পী ধ্রুব এষ একুশের বইমেলা সামনে রেখেও তার ব্যস্ত সময়ের ফাঁকে গভীর আন্তরিকতা দিয়ে নিউজ পোর্টালের লোগো তৈরি করে দিয়েছেন। মত ও পথের অমিলে নানাসময়ে গণমাধ্যমে বাহাস হলেও আমার বন্ধু লেখক সাংবাদিক এবং গবেষণা সংস্থা পরিপ্রেক্ষিত ও বিজ্ঞাপনী সংস্থা ক্রিয়েটিভ মিডিয়ার চেয়ারম্যান সৈয়দ বোরহান কবীর পরামর্শ দিয়েছেন। দুটি নান্দনিক টেলিভিশন বিজ্ঞাপন তৈরি করে দিয়েছেন সৃষ্টিশীলতার সাক্ষর রেখে। অর্থমূল্য নেননি, হৃদয় মূল্য দিয়েছেন। পূর্ব পশ্চিম পরিবারের সঙ্গে উপদেষ্টা হিসেবে যুক্ত হয়ে ঢাকা স্টক এক্সেচেঞ্জের সাবেক পরিচালক ও লেখিকা খুজিস্তা-নুর ই নাহরীন মুন্নী, অভিনেত্রী নির্মাতা রোকেয়া প্রাচী, সংগীত শিল্পী সেলিম চৌধুরী, রাকসুর সাবেক পত্রিকা সম্পাদক জাকিরুল হক টিটন, স্থপতি লেখক ও নাট্যকার শাকুর মজিদ, নিয়মিত মিটিংয়ে থেকে তাদের হৃদয় নি:সৃত আন্তরিকতাই দেননি, নানামুখি আইডিয়াও দিয়েছেন। চিত্রনির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীও তার হৃদয় নিয়ে উপদেষ্টা হিসেবে পাশে দাঁড়িয়েছেন। নির্বাহী সম্পাদক দীপু হাসান, সহযোগী সম্পাদক শাকির আহমদ, উপ সম্পাদক সুবীর দাশ, শরীফ তালুকদার, প্রধান প্রতিবেদক প্রতীক ইজাজ, বার্তা সম্পাদক বিপুল হাসান, সিনিয়র সহকারী সম্পাদক রনজু রাইম, সমন্বয়কারী সেজুল হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি খোন্দকার সোহেল, সিনিয়র নিউজ রুম এডিটর নিপু বড়ুয়া, নতুনদের নিয়ে কর্মশালা থেকে টানা দু’মাসের প্রস্তুতি যুদ্ধে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন।
প্রিয় পাঠকগণ, দেশবরেণ্য বিভিন্ন শ্রেণী পেশার অনেকে এই চ্যালেঞ্জে আমার পাশে দাঁড়িয়েছেন, বিভিন্ন কর্পোরেট হাউজের আলোকিত মুখগুলো যে ভাবে সাহায্য করেছেন তাতে আমি অভিভূত। বিভিন্ন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব স্নেহের ঋণে বন্দী করেছেন। সারাদেশের প্রতিনিধিদের সম্মিলনে ও সংবাদকর্মীদের কর্মশালায় প্রশিক্ষণ দিয়ে বন্ধুবর সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা, সামিয়া রহমান, পলাশ আহসান ও চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আর রাজি সাহায্য করেছেন। প্রবাসের মুখগুলো স্বত:স্ফুর্তভাবে আমাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।
প্রিয় পাঠকগণ, বাংলাদেশ প্রতিদিনে থাকাকালীন আমাদের ভাই বন্ধু, পরম আপনজন ডাক্তার জাহাঙ্গীর সাত্তার টিংকু ব্রেইন টিউমারে অকাল মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুকে ঘিরে তার প্রথম তারুণ্যের হাত ধরে বেড়ে ওঠা বন্ধু মোজাম্মেল বাবু এবং প্রয়াতের স্ত্রী খুজিস্তা নুর ই নাহরীন মুন্নীকে এই অকাল মৃত্যু নিয়ে লিখতে অনুরোধ করি। খুজিস্তা নুর ই নাহরীন মুন্নী তার ১৮ বছরের জীবনসঙ্গী ডাক্তার জাহাঙ্গীর সাত্তার টিংকুকে নিয়ে একটি হৃদয়স্পর্শী লেখা পাঠান। সেটি ছাপা হওয়ার পর ক্যানসারে অকালে চলে যাওয়া আরেক চলচ্চিত্রকার চাষী নজরুল ইসলাম টেলিফোন করে লেখিকার টেলিফোন নাম্বার নিয়ে যোগাযোগ করেন। তিনি চেয়েছিলেন, এই লেখার ওপর ভিত্তি করে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন। ঘাতক ক্যান্সার তাকে সেই সুযোগ দেয়নি। টিংকুর বাড়ির মেঝেতে তার ফোঁটা ফোঁটা অশ্রুবিন্দু শুধু দীর্ঘশ্বাসের স্মৃতিচিহ্ন হয়ে রয়েছে। সেই থেকে আমার দেখা এক আত্মপ্রত্যয়ী সংগ্রামী বিদুষী নারী খুজিস্তা নুর ই নাহরীন নিয়মিত লেখালেখিতে আসেন। একদিন তিনি আলাপকালে আগামীতে প্রিন্ট মিডিয়ার বদলে অনলাইন মিডিয়া জনপ্রিয়তা পাবে বলে মন্তব্য করেন। পশ্চিমা দুনিয়ায় ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সঙ্গে পাল্লা দিতে গিয়ে প্রিন্ট মিডিয়া মুখ থুবড়ে পড়লেও দক্ষিন এশিয়ায় প্রিন্ট মিডিয়া মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে বলে তর্কে জিতে যাই। সেই বিতর্কের অনেকদিন পর দেখা যায় পশ্চিমা দুনিয়াই নয় দক্ষিণ এশিয়া এমনকি বাংলাদেশেও অনলাইন মিডিয়া মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। সরকার নীতিমালা প্রনয়ণের তোড়জোড় শুরু করেছে। অন্যদিকে প্রিণ্ট মিডিয়া থেকে বেরিয়ে আসার মধ্য দিয়ে ভেতরে তৈরি হওয়া একগুয়ে, ক্ষেপাটে, জেদি, সৃষ্টিশীল মনে নিজের মতো করে দাঁড়াবার তাড়া দেয়। নিজের সীমাবদ্ধতা বিবেচনায় আমার চিন্তায় নিউজ পোর্টাল ঠাঁই পায়। সেই বীজ ডালপালা মেলতে শুরু করে যখন গেল কোরবানীর ঈদে লন্ডন ও নিউ ইয়র্ক সফরে যাই। প্রবাসী সতীর্থদের সঙ্গে এ নিয়ে আমার কথাবার্তা হয়। দুনিয়াজুড়ে যেখানেই যাই বিমান বন্দর থেকে শপিং মল, হোটেল লবি সবখানেই মুঠোফোনে অনলাইনে খবরপাঠ এক চেনা দৃশ্য হয়ে গেছে।
দেশে ফিরে আমার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে বনানীতে স্থপতি শাকুর মজিদের অফিসে যাই। সেখানের আড্ডায় যেতে ফোনটি করেছিলেন সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা। অস্থির পায়চারী করতে করতে বললাম, এবার নিজেই কিছু করবো। তারা দুজন তাকালেন। বললাম নিউজ পোর্টাল অনলাইন। শাকুর মজিদ একটি নাম বললেন। আমার পছন্দ হলো না। বললাম, পূর্বপশ্চিম। ইশতিয়াক রেজা ও তিনি সমর্থন দিলেন। সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন। পূর্ব দিগন্তে সূর্য ওঠে পশ্চিমে লাল আভা ছড়াতে ছড়াতে তামাম দুনিয়ায় কত খবর ঘটে যায়! শুধু কি তাই? প্রিয় লেখক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পূর্ব পশ্চিম নামে যে ইতিহাস নির্ভর উপন্যাস লিখেছেন সেটি আমাদের অহংকার। শাকুর মজিদ কাকে জানি ফোন করলেন। সঙ্গে সঙ্গে ক্রেডিট কার্ডে ডোমেইন কিনে দিলেন। তারপর প্রিন্স ও রায়হান হয়ে একটি স্বপ্নের পূর্ণতা পেলো ধীরে ধীরে। এইখানে সাবেক ছাত্র নেতা আব্দুল্লাহিল কাইয়ুম উৎসাহ দিয়ে বললেন নামেই অর্ধেক এগিয়ে গেছেন আপনি। আমার এই যাত্রাপথে ভালোবাসা ও হৃদয় দিয়ে যারা সাথী হয়েছেন তাদের ঋণ কখনো শোধ হবার নয়।
প্রিয় পাঠকগণ,
মার্কিন সংবাদপত্র এসোসিয়েশন জরিপ করে বলেছে ২০৫০ সালে পৃথিবীতে প্রিন্ট মিডিয়া থাকছে না। সানডে টাইমস জরিপ করে বলেছে ইংল্যান্ডে ৫ বছর পর প্রিন্ট মিডিয়া থাকবে না। আমাদের দেশে প্রিন্ট মিডিয়া কম হলেও আরো দুই যুগ থাকবে। যদিও অনেকে বাড়িয়ে বলছেন আগামী দিনে অনলাইন টিভির কাছে ইলেকট্রনিক মিডিয়াও মুখ থুবড়ে পড়বে।
প্রিয় পাঠকগণ,
বাংলাদেশের তরুণ সমাজ এখন অনলাইন মিডিয়াকে শক্তিশালী গণমাধ্যমে রূপ দিয়েছে। তারুণ্যের এই শক্তির ওপর ভর করে আমাদের চ্যালেঞ্জ পিছিয়ে না থাকার। একুশ শতকের কান সংবাদপ্রধান, এই শ্লোগান নিয়ে বহুরৈখিক সংবাদ, মতামত, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, রাজনীতি, প্রশাসন, অপরাধ জগৎ নিয়ে সব মত পথের মহাসম্মিলনে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের মুক্তচিন্তার প্লাটফর্ম হচ্ছে পূর্বপশ্চিমবিডি ডটকম।
আমাদের স্বপ্ন আকাশছোঁয়া। অর্ধেক জীবন পার করে নেয়া এই চ্যালেঞ্জে আপনারা পাশে থাকুন, সর্বাত্মক সহযোগিতা করুন, আমরা আপনাদের নিয়ে পূর্বপশ্চিম বিডি ডটকমের পথ চলতে শুরু করেছি। আপনারা লিখুন, আপনারা মতামত দিন, আপনারা পরামর্শ দিন, মানুষের শক্তির চেয়ে কোন শক্তিকে আমরা বড় মনে করি না। মহাত্মা গান্ধী বলেছেন অপর পক্ষের মতামত গ্রহণ করার মানসকিতা না থাকলে গণতন্ত্রেও বিবর্তন সম্ভব নয়।
একজন দার্শনিক বলেছেন সত্য কারো একার সম্পদ নয়। প্রিয় পাঠক, সত্য জানার আগ্রহ অধিকার প্রতিিিট নাগরিকের। প্রতিটি মানুষের। খবর বন্ধ রাখার কোন সুযোগ আজকের দুনিয়ায় নেই। আপনাদের কাছে অঙ্গীকার করছি আমরা একটি অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক সমাজে বিশ্বাসী। এমন সময়ে আমরা এসেছি যখন দেশ নয়, দুনিয়া জুড়েই ধর্মের নামে সন্ত্রাসবাদ ছড়িয়ে পড়ছে। এক শ্বাসরুদ্ধকর প্রতিকুল পরিস্থিতি অতিক্রম করছে বিশ^। মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার। সন্ত্রাসবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার প্রশ্নে আমাদের আপোস নেই। আপনাদেরকে কথা দিচ্ছি আপনাদের মতামত আমরা প্রাধান্য দেব। আপনাদের সমালোচনার জবাব দেব। গালমন্দটুকু শুধু মুছে দেব। নির্মোহ সত্য প্রকাশে দ্বিধাহীন যেমন থাকবো, তেমনি কারো প্রতি ব্যক্তিগত রাগ ক্ষোভ বা বিদ্বেষ নিয়ে মনগড়া রিপোর্টে যাবো না। বিশ্ব সংসার তন্ন তন্ন করে আপনাদের সামনে যেমন পূর্ণসত্য উপস্থাপন করবো তেমনি আমাদের সাফল্যের অংশীদার করবো দেশ ও মানুষকে। আপনারা আস্থা রাখুন, সঙ্গে থাকুন।
পীর হাবিবুর রহমান
প্রধান সম্পাদক: পূর্বপশ্চিমবিডি ডটকম