Monday, 21 October 2013


জন্মভূমি


- গোবিন্দচন্দ্র দাস

জননী গো জন্মভূমি তোমারি পবন
দিতেছে জীবন মোরে নিশ্বাসে নিশ্বাসে!
সুন্দর শশাঙ্কমুখ, উজ্জ্বল তপন,
হেরেছি প্রথমে আমি তোমারি আকাশে।
ত্যাজিয়ে মায়ের কোল, তোমারি কোলেতে
শিখিয়াছি ধূলি‐খেলা, তোমারি ধূলিতে।

তোমারি শ্যামল ক্ষেত্র অন্ন করি দান
শৈশবের দেহ মোর করেছে বর্ধিত।
তোমারি তড়াগ মোর রাখিয়াছে প্রাণ,
দিয়ে বারি, জননীর স্তন্যের সহিত।
জননীর করাঙ্গুলি করিয়া ধারণ,
শিখেছি তোমারি বক্ষে বাড়াতে চরণ। 

তোমারি তরুর তলে কুড়ায়েছি ফল,
তোমারি লতার ফুলে গাঁথিয়াছি মালা।
সঙ্গীদের সঙ্গে সুখে করি কোলাহল,
তোমারি প্রান্তরে আসি করিয়াছি খেলা।
তোমারি মাটিতে ধরি জনকের কর,
শিখেছি লিখিতে আমি প্রথম অক্ষর।

ত্যাজিয়া তোমার কোল যৌবনে এখন,
হেরিলাম কত দেশ কত সৌধমালা।
কিন্তু তৃপ্ত না হইল এ দগ্ধ নয়ন,
ফিরিয়া দেখিতে চাহে তব পর্ণশালা।
তোমার প্রান্তর নদী, পথ, সরোবর,
অন্তরে উদিয়া মোর জুড়ায় অন্তর।

তোমাতে আমার পিতা পিতামহগণ,
জন্মেছিল একদিন আমারই মতন।
তোমারি এ বায়ু তাপে তাঁহাদের দেহ
পুষেছিলে, পুষিতেছ আমায় যেমন।
জন্মভূমি জননী আমার যথা তুমি,
তাঁহাদেরও সেইরূপ তুমি—মাতৃভূমি। 

তোমারি ক্রোড়েতে মোর পিতামহগণ
নিদ্রিত আছেন সুখে জীবলীলা‐শেষে
তাঁদের শোণিত, অস্থি সকলি এখন
তোমার দেহের সঙ্গে গিয়েছে মা মিশে। 
তোমার ধূলিতে গড়া এ দেহ আমার
তোমার ধূলিতে কালে মিশাবে আবার।

বঙ্গভূমির প্রতি



রেখো মা দাসেরে মনে, এ মিনতি করি পদে
সাধিতে মনের সাধ,
ঘটে যদি পরমাদ,
মধুহীন করো না গো তব মনঃকোকনদে।
প্রবাসে দৈবের বশে,
জীব-তারা যদি খসে
এ দেহ-আকাশ হতে, – খেদ নাহি তাহে।
জন্মিলে মরিতে হবে,
অমর কে কোথা কবে,
চিরস্থির কবে নীর, হায় রে, জীবন-নদে?
কিন্তু যদি রাখ মনে,
নাহি, মা, ডরি শমনে;
মক্ষিকাও গলে না গো, পড়িলে অমৃত-হ্রদে!
সেই ধন্য নরকুলে,
লোকে যারে নাহি ভুলে,
মনের মন্দিরে সদা সেবে সর্ব্বজন; –
কিন্তু কোন্ গুণ আছে,
যাচিব যে তব কাছে,
হেন অমরতা আমি, কহ, গো, শ্যামা জন্মদে!
তবে যদি দয়া কর,
ভুল দোষ, গুণ ধর,
অমর করিয়া বর দেহ দাসে, সুবরদে! –
ফুটি যেন স্মৃতি-জলে,
মানসে, মা, যথা ফলে
মধুময় তামরস কি বসন্ত, কি শরদে!

© মাইকেল মধুসূদন দত্ত ।


কবি-মাতৃভাষা

- মাইকেল মধুসূদন দত্ত

নিজাগারে ছিল মোর অমূল্য রতন
অগণ্য; তা সবে আমি অবহেলা করি,
অর্থলোভে দেশে দেশে করিনু ভ্রমণ,
বন্দরে বন্দরে যথা বাণিজ্যের তরী।
কাটাইনু কত কাল সুখ পরিহরি,
এই ব্রতে, যথা তপোবনে তপোধন,
অশন, শয়ন ত্যজে, ইষ্টদেবে স্মরি,
তাঁহার সেবায় সদা সঁপি কায় মন।
বঙ্গকূল-লক্ষ্মী মোরে নিশার স্বপনে
কহিলা – “হে বৎস, দেখি তোমার ভকতি,
সুপ্রসন্ন তব প্রতি দেবী সরস্বতী।
নিজ গৃহে ধন তব, তবে কি কারণে
ভিখারী তুমি হে আজি, কহ ধন-পতি?
কেন নিরানন্দ তুমি আনন্দ সদনে?


আমাদের দেশ

- আ. ন. ম. বজলুর রশীদ
আমাদের দেশ তারে কত ভালবাসি
সবুজ ঘাসের বুকে শেফালির হাসি,
মাঠে মাঠে চরে গরু নদী বয়ে যায়
জেলে ভাই ধরে মাছ মেঘের ছায়ায়।
রাখাল বাজায় বাঁশি কেটে যায় বেলা
চাষা ভাই করে চাষ কাজে নেই হেলা।
সোনার ফসল ফলে ক্ষেত ভরা ধান
সকলের মুখে হাসি, গান আর গান।


খাঁটি সোনা


মধুর চেয়ে আছে মধুর
সে এই আমার দেশের মাটি
আমার দেশের পথের ধূলা
খাঁটি সোনার চাইতে খাঁটি।
চন্দনেরি গন্ধভরা,
শীতল করা, ক্লান্তি-হরা
যেখানে তার অঙ্গ রাখি
সেখানটিতেই শীতল পাটি।
শিয়রে তার সূর্ এসে
সোনার কাঠি ছোঁয়ায় হেসে,
নিদ-মহলে জ্যোৎস্না নিতি
বুলায় পায়ে রূপার কাঠি।
নাগের বাঘের পাহারাতে
হচ্ছে বদল দিনে রাতে,
পাহাড় তারে আড়াল করে
সাগর সে তার ধোয়ায় পাটি।
নারিকেলের গোপন কোষে
অন্ন-পানী’ যোগায় গো সে,
কোল ভরা তার কনক ধানে
আটটি শীষে বাঁধা আঁটি।
মধুর চেয়ে আছে মধুর
সে এই আমার দেশের মাটি

[~সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত~]

স্বদেশ আমার


জেলের সেলে বন্দী ছিলো
মৃতের স্তুপের অন্ধকারে বন্দী ছিলো
বন্দী ছিলো বন্ধ দুয়ার
ভয় থমথম ঘরের মাঝে।
শহর জুড়ে কারফ্যু তার কাফন ছড়ায়
সেই কাফনে বন্দী ছিলো।

ওরা তখন মন্ত্রপুত মশাল নিয়ে নামলো পথে
মৃতের স্তুপে ফোটালো ফুল
নতুন প্রাণে গাঁথলো নতুন দীপাবলি।

আগুন জ্বলে। জ্বলতে থাকে পাশব আঁধার
গ্রাম নগরে রাত পেরিয়ে, রাত পেরিয়ে
রাত পেরিয়ে
সূর্য নামে।

তখন দেখি
আলোর মুকুট মাথায় পরে
ভুবন জুড়ে বাইরে এলো বন্দিনী মা বাংলা আমার
স্বদেশ আমার।

# আহসান হাবীব

Sunday, 20 October 2013


স্বপ্ন দেশ

আজ ফাল্গুনী চাঁদের জ্যোছনা-জুয়ারে ভুবন ভাসিয়া যায়,
ওরে স্বপন-দেশের পরী-বিহঙ্গী, পাখা মেলে উড়ে’ যায়’!
এই শ্যামল কোমল ঘাসে এই বিকচ পুন্দরাশে
এই বন-মল্লিকাবাসে, এই ফুরফুরে মলয়ায়—
তোর তারালোক হ’তে কিরণ-সুতায় ধীরে ধীরে নেমে আয়ে |


দেখ্ ঘাসের ডাঁটায় ফড়িং ঘুমায় সবুজ-স্বপন-সুখে,
দেখ্ পদ্মকোরকে অচেতন অলি শেষ মধুকণা মুখে!
হেথা ঝিঁঝির ঝি ঝিট তান, দেখ নিশি শেষে অবসান,
ছোট টুনটুনিদের গান এবে বিরত ক্লান্ত বুকে ;—
দেখ্ মোহ-মুর্ছিত মুখর ধরণী, সব ধ্বনি গেছে চুকে’ ||


তোরে শিরীষ-ফুলের পাপড়ি খসায়ে পরাগ করিব দান,
তোরে রজনীগন্ধা গেলাস ভরিয়া অমিয়া করাব পান ;
শেষে ঘুম যদি তোর পায় হোথা ঘুমাবি হিন্দোলায়,
মোরা মৃদু দোল দিব তায়, গাহি’ মৃদু-গুঞ্জন গান,—
চারু ঊর্ণনাভের ঝিকিমিকি জালে কেশরের উপাধান |


শেষে জোনাকির আলো নিভাবে যখন ঊষার কুয়াশাসারে,
মোরা স্বপন-শয়ন ভাঙি’ দিব তোর পাপিয়ার ঝংকারে!
যদি ফিরে’ যেতে মন চায়, যাস্ ঝিরি ঝিরি ঊষা-বায়,
চড়ি’ প্রজাপতির পাখায়— হিম সিক্ত শিশিরধারে ;
সাথে নিয়ে যাস্ এই রজনীর স্মৃতি ধরণীর পরপারে ||

© যতীন্দ্র মোহন বাগচী ।

স্বদেশ

এই যে নদী
নদীর জোয়ার 
নৌকা সারে সারে,
একলা বসে আপন মনে
বসে নদীর ধারে
এই ছবিটি চেনা।
মনের মধ্যে যখন খুশি
এই ছবিটি আঁকি
এক পাশে তার জারুল গাছে
দু’টি হলুদ পাখি,
এমনি পাওয়া এই ছবিটি
কড়িতে নয় কেনা।

মাঠের পরে মাঠ চলেছে
নেই যেন এর শেষ
নানা কাজের মানুষগুলো
আছে নানান বেশ,  
মাঠের মানুষ যায় মাঠে আর
হাটের মানূষ হাটে,
দেখে দেখে একটি ছেলের
সারাটাদিন কাটে।
এই ছেলেটির মুখ
সারাদেশের সব ছেলেদের
মুখেতে টুকটুক।
কে তুমি ভাই,
প্রশ্ন করি যখন,
ভালবাসার শিল্পী আমি,
বলবে হেসে তখন।

এই যে ছবি এমনি আঁকা
ছবির মত দেশ,
দেশের মাটি দেশের মানুষ
নানান রকম বেশ,
বাড়ি বাগান পাখ-পাখালি
সব মিলে এক ছবি,
নেই তুলি নেই রং তবুও
আঁকতে পারি সবই।

## আহসান হাবীব (১৯১৭ - ১৯৮৫)


বাংলাদেশ


একটি দেশের নাম বাংলাদেশ,
রক্তক্ষয়ী যুদ্ধবিজয়ী স্বাধীন একটি দেশ।
এই দেশের শহীদদের স্মৃতির নাই কোন শেষ,
এই দেশের নাম বাংলাদেশ।
একটি দেশের নাম বাংলাদেশ,
বিশ্বের মানচিত্রে স্থান করে নেওয়া
ছোট্ট স্বাধীন একটি দেশ,
এই দেশের নাম বাংলাদেশ।
যেই দেশের সৌন্দর্যের নাই কোন তুলনা,
ঠিক যেন প্রকৃতির হাতে গড়া অপরূপা কন্যা,
এর মত রূপসী নেই কোন শেষ
সে আমার জন্মভূমি,
প্রিয় বাংলাদেশ।


© হুমায়ুন আহমেদ সৃজন  ।

দেশ 

খেতের পরে খেত চলেছে, খেতের নাহি শেষ
সবুজ হাওয়ায় দুলছে ও কার এলো মাথার কেশ।
সেই কেশেতে গয়না ও পরায় প্রজাপতির ঝাঁক,
চঞ্চুতে জল ছিটায় সেথা কালো কালো কাক।
সাদা সাদা বক-কনেরা রচে সেথায় মালা,
শরৎকালের শিশির সেথা জ্বালায মানিক আলা।
তারি মায়ায় থোকা থোকা দোলে ধানের ছড়া,
মার আঁচলের পরশ যেন সকল অভাব-হরা।
সেই ফসলে আসমানীদের নেইকো অধিকার,
জীর্ণ পাঁজর বুকের হাড়ে জ্বলছে হাহাকার।
বনের পরে বন চলেছে বনের নাহি শেষ,
ফুলের ফলের সুবাস ভরা এ কোন্ পরীর দেশ?
নিবিড় ছায়ায় আঁধার করা পাতার পারাবার,
রবির আলো খন্ড হয়ে নাচছে পায়ে তার।
সুবাস ফুলের বুনোট করা বনের লিপিখানি,
ডালের থেকে ডালের পরে ফিরছে পাখি টানি।
কচি কচি বনের পাতা কাঁপছে তারি সুরে,
ছোট ছোট রোদের গুড়ো তলায় নাচে ঘুরে,
মাথার পরে কালো কালো মেঘেরা এসে ভেড়ে
বুনো হাতীর দল এসেছে আকাশখানি ছেড়ে।
এই বনেতে আসমানীদের নেইকো অধিকার,
জীর্ণ পাঁজর বুকের হাড়ে জ্বলছে অনাহার।
নদীর পরে নদী গেছে নদীর নাহি শেষ,
কত অজান গাঁ পেরিয়ে কত না-জান দেশ।
সাত সাগরের পণ্য চলে সওদাগরের নায়,
সুধার ধারা গড়িয়ে পড়ে গঞ্জ নগর ছায়।
চখায় মুকর বালুর চরা হাসে কতই তীরে,
ফুলের বনে রঙিন হয়ে যায় বা কভু ধীরে;
কত মিনার-সৌধ চূড়ার কোল ঘেঁষিয়া যায়,
কত শহর হাট-বন্দর বাজার ফেলে বায়।
কত নায়ের ভাটিয়ালীর গানে উদাস হয়ে,
নদীর পরে নদী চলে কোন অজানায বয়ে।
সেই নদীতে আসমানীদের নেইক অধিকার,
জীর্ণ পাঁজর বুকের হাড়ে জ্বলছে হাহাকার।

© জসীমউদ্দীন  ।

Friday, 18 October 2013

কোন্ দেশে

কোন্ দেশেতে তরুলতা
সকল দেশের চাইতে শ্যামল?
কোন্ দেশেতে চলতে গেলেই
দলতে হয় রে দুর্বা কোমল?
কোথায় ফলে সোনার ফসল,
সোনার কমল ফোটেরে?
সে আমাদের বাংলাদেশ,
আমাদেরই বাংলা রে!
কোথায় ডাকে দোয়েল-শ্যামা
ফিঙে নাচে গাছে গাছে?
কোথায় জলে মরাল চলে,
মরালী তার পাছে পাছে?
বাবুই কোথা বাসা বোনে,
চাতক বারি যাচে রে?
সে আমাদের বাংলাদেশ,
আমাদেরই বাংলা রে!

[সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত]


My Native Land

Sir Walter Scott

Breathes there the man, with soul so dead,
Who never to himself hath said,
This is my own, my native land!
Whose heart hath ne'er within him burn'd,
As home his footsteps he hath turn'd
From wandering on a foreign strand!
If such there breathe, go, mark him well;
For him no Minstrel raptures swell;
High though his titles, proud his name,
Boundless his wealth as wish can claim;
Despite those titles, power, and pelf,
The wretch, concentred all in self,
Living, shall forfeit fair renown,
And, doubly dying, shall go down
To the vile dust, from whence he sprung,
Unwept, unhonour'd, and unsung.

যুদ্ধাপরাধীকে কবর দিতে দিল না জনতা

ইতালিতে গত মঙ্গলবার চরম জনবিক্ষোভের মুখে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে সাজাপ্রাপ্ত এক যুদ্ধাপরাধীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে গেছে। ওই দিন ইতালির রাজধানী রোমের কাছে আলবারো লাজিলা শহরে এরিখ প্রিবকে নামের ওই যুদ্ধাপরাধীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল।

মঙ্গলবার এরিখ প্রিবকের লাশ বহনকারী গাড়িটি শহরের রক্ষণশীল ক্যাথলিক চার্চের সেন্ট পিউস সম্প্রদায়ের গোরস্থানের প্রধান ফটকে পৌঁছলে শত শত বিক্ষোভকারী গাড়িটির গায়ে লাথি মারেন। এ সময় তাঁরা বলেন, ‘আমাদের শহরে এই কসাইয়ের জায়গা হবে না।’ এ ছাড়া ‘যুদ্ধাপরাধীর ঠাঁই নেই’ সংবলিত একটি ব্যানারও লাশবাহী গাড়িটিতে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পরে পুলিশের সহযোগিতায় লাশবহনকারী গাড়িটি রোমের একটি সামরিক বিমানবন্দরে ছাউনির হিমাগারে রাখা হয়।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে ফ্যাসিস্ট জার্মানির এসএস কমান্ডার ছিলেন এরিখ প্রিবকে। তিনি ১৯৪৪ সালের ২৪ মার্চ রোমের কাছে নািসবিরোধী ৩৩৫ জন ইতালীয় যোদ্ধার হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিলেন।

প্রথম জীবনে হোটেল কর্মকর্তা হিসেবে ইউরোপের নানা নামীদামি হোটেলে চাকরি করেন প্রিবকে। ইতালীয় ভাষায় পারদর্শী প্রিবকে ১৯৩৬ সালে হিটলারের গোয়েন্দা সংস্থা গেস্টাপোর হয়ে কাজ করার জন্য ইতালিতে যান। সেখানে দ্রুতই তিনি ইতালির ফ্যাসিস্ট পুলিশের কমান্ডার হিসেবে কাজ শুরু করেন।


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রায় তিন বছর ইতালির রিমিনিতে মিত্র বাহিনীর হাতে বন্দী থাকেন প্রিবকে। ১৯৪৮ সালে একটি ক্যাথলিক চার্চের সহযোগিতায় ভিন্ন পরিচয়ে আর্জেন্টিনা পালিয়ে যান।

১৯৯৩ সালে আর্জেন্টিনায় এরিখ প্রিবকের আসল পরিচয় ফাঁস হয়ে গেলে দেশটির সরকার তাঁকে গৃহবন্দী করে রাখে। ১৯৯৫ সালে ইতালির অনুরোধে প্রিবকেকে রোমে ফেরত পাঠানো হয়। রোমের একটি সামরিক আদালত ১৯৯৬ সালে ৮৩ বছর বয়সী এই যুদ্ধবন্দীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন।

চলতি মাসের ১১ তারিখ ১০০ বছর বয়সে এরিখ প্রিবকে মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর মৃত্যুর পর থেকেই অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার অনুষ্ঠান নিয়ে জটিলতা শুরু হয়। প্রিবকের অন্তিম ইচ্ছা ছিল আর্জেন্টিনায় তাঁর স্ত্রীর কবরের পাশে কিংবা তাঁর জন্মস্থান বার্লিনের কাছে হেনিংসডর্ফে শেষ শয্যায় শায়িত হওয়া। তবে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ তা অনুমোদন করেনি।

@ http://www.prothom-alo.com/international/article/55935
সরাফ আহমেদ, হ্যানোভার (জার্মানি) | আপডেট: 

Thursday, 17 October 2013


Nature

William Wilsey Martin (1833-1913)

I
The heart of Nature soothes the heart of man, 
If with his heart he looks into her eyes. 
A place of leaves, wide air, and sunny skies, 
Will soothe him more than even woman can. 

II
We cry, and Nature answers us in time; 
With both hands gives us what we ask and prize; 
A lily pure and pale to glad our eyes, 
A spotted toad from out the ooze and slime. 




Nature

by: Martha Lavinia Hoffman (1865-1900)

Nature is wonderful, the light that plays
In every pleasing shape that eye could wish,
Painting the sunrise with Aurora's blush
And evening with the sunset's burning flames,
Flooding the zenith as with burnished gold
And e'en the gloaming with enchanting shades
That though less brilliant yet within themselves
Possess distinct and fascinating charms,
Is wonderful if we but paused to think
What our bright world would be, deprived of light,
Even the night would miss the twinkling lamps
And mellow moonbeams; while the day
Would lose her all, for light is day; and darkness
Would usurp her throne, hanging a sable curtain where before
The golden beams lost their identity in one unbroken flood, that swept adown
Aerial channels and through rifted clouds,
Harmoniously blending earth and heaven.
Take only light--one blessing of our earth--
Leaving all else, flowers, birds and trees, beautiful landscapes, homes of loveliness,
Glittering gems and piles of hoarded wealth;
What were all these without a ray of light?
An idle mockery, through starless night blinded and groping, to exist where death,
Roaming through flowery meadows, by cool brooks
Stumbling o'er paths within a hopeless maze,
Thirsting with plenteous streams on eather hand,
Dying of hunger in green fields of corn,
Take light, and day is night and life is death
Comfort and happiness and friends are lost
In the dark labyrinth of starless night.
The humblest weed in some dark crevice hid
Holds in its narrow limits the same forces
That control the mighty tree and bid it add
Year after year the leaf, the twig, the branch,
'Till 'neath its friendly shade, beasts of the field find
Shelter from Summer's scorching rays
And the tired traveler reclines to rest.

It stands a living tree in miniature
Lifting its tiny branches toward the heavens,
Spreading its leaflets to the morning sun
Rearing its buds and blossoms, fruit and seeds, to live and flourish when it has decayed.
We pass them by or tread them 'neath our feet,
Yet Nature with her wealth of birds and flowers,
Has in her heart a place for every weed;
For her quick eyes require no microscope
To note the varied wonders and delights
That the Creator's humblest works possess.

Wednesday, 16 October 2013


তাকডুম তাকডুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল

----শচীন দেব বর্মন

তাকডুম তাকডুম বাজাই
আমি তাকডুম তাকডুম বাজাই
বাংলাদেশের ঢোল
সব ভুলে যাই
তাও ভুলি না বাংলা মায়ের কোল
বাংলা জনম দিলা আমারে ।।
তোমার পরান আমার পরান
এক নাড়িতে বাঁধা রে
মা-পুতের এ বাঁধন ছেড়ার
সাধ্য কারো নাই
সব ভুলে যাই
তাও ভুলি না বাংলা মায়ের কোল
মা তোমার মাটির সুরে সুরেতে ।।
আমার জীবন জুড়াইলা মাগো
বাউল ভাটিয়ালিতে
পরান খুইলা মেঘনা তিতাস
পদ্মারই গান গাই
সব ভুলে যাই
তাও ভুলি না বাংলা মায়ের কোল
বাজে ঢোল নরম গরম তালেতে
বিসর্জনের ব্যাথা ভোলায়
আগমনের সুরেতে
বাংলাদেশের ঢোলের বোলে
ছন্দ পতন নাই
সব ভুলে যাই
তাও ভুলি না বাংলা মায়ের কোল ।


 দুর্ভাগা দেশ - রবীন্দ্রনাথ ঠাঁকুর 


হে মোর দুর্ভাগা দেশ , যাদের করেছে অপমান ,
অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান।
মানুষের অধিকারে
বঞ্চিত করেছ যারে
সম্মুখে দাঁড়িয়ে রেখে তবু কোলে দাও নাই স্থান
অপমাণে হতে হবে তাহাদের সবার সমান।

যারে তুমি নীচে ফেল সে তোমারে বাধিবে নীচে
পশ্চাতে রেখেছ যারে সে তোমারে পশ্চাতে টানিছে ,
অজ্ঞানের অকারে
আড়ালে ঢাকিছ যারে
তোমার মঙ্গল ঢাকি গড়িছে সে ঘোর ব্যবধান
অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান।






জন্মভূমি


অভিন্ন রুপে দেখি গো মা তোকে
এক অপরুপ সাজে সেজেছো তুমি
উজ্জ্বল সৌন্দর্য্য বিকশিত করে
অম্লান অহংকারে এ ধূলির ধরায়
তোমার অমৃত স্পর্শ ছোঁয়ায়
শত দুঃখে জুড়ায় এ প্রাণ
নির্বিকার চেয়ে থাকি বিমুগ্ধ নয়নে
উজ্জ্বল প্রাণের মহিমায়।

বিশুদ্ধ শোধনে শোধনে কর এ মন
চাই না পার্থিব অজস্র ধন ভান্ডার
ক্ষত বিক্ষত কর লালসা আমার
যেনো উদ্বুদ্ধ হই সেবিতে জন্মভূমি।

© আওলাদ হোসেন । 

Monday, 14 October 2013

সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে।

কবি গুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
সার্থক জনম আমার জন্মেছি এই দেশে।
সার্থক জনম, মা গো, তোমায় ভালোবেসে ॥
জানি নে তোর ধনরতন আছে কি না রানীর মতন,
শুধু জানি আমার অঙ্গ জুড়ায় তোমার ছায়ায় এসে ॥
কোন্‌ বনেতে জানি নে ফুল গন্ধে এমন করে আকুল,
কোন্‌ গগনে ওঠে রে চাঁদ এমন হাসি হেসে।
আঁখি মেলে তোমার আলো প্রথম আমার চোখ জুড়ালো,
ওই আলোতেই নয়ন রেখে মুদব নয়ন শেষে ॥

বাংলাদেশ

অমিয় চক্রবর্তী

কল্যানীর ধারাবাহী যে- মাধুরী বাংলা ভাষায়
গড়েছে আত্মীয় পল্লী, যমুনা-পদ্মার তীরে তীরে
রুপোলি জলের ধারে, আম-জাম-নারকেল ঘেরা
আমন ধানের ক্ষেতে শ্রুতিময় তারি অন্তর্লীন
বানী শোনো প্রাত্যহিক- বহু মিশ্র প্রাণের সংসারে
সেই বাংলাদেশে ছিল সহস্রের একটি কাহিনী
কোরানে পুরাণে শিল্পে, পালা-পার্বণের ঢাকে ঢোলে
আউল বাউল নাচে; পুণ্যাহের সানাই রঞ্জিত
রোদ্দুরে আকাশতলে দেখ কারা হাটে যায়, মাঝি
পাল তোলে, তাঁতি বোনে, খড়ে-ছাওয়া ঘরের আঙনে
মাঠে ঘাটে শ্রমসঙ্গী নানাজাতিধর্মের বসতি
চিরদিন বাংলাদেশ-

ওরা কারা বুনো দল ঢোকে
এরি মধ্যে ( থামাও, থামাও), স্বর্ণশ্যাম বুক ছিঁড়ে
অস্ত্র হাতে নামে সান্ত্রী কাপুরুষ, অধম রাষ্ট্রের
রক্ত পতাকা তোলে, কোটি মানুষের সমবায়ী
সভ্যতার ভাষা এরা রদ করবে ভাবে, মরু-পশু
মারীর অন্ধতা ঝড়ে হানে অসহায় নরনারী
অলভ্য জয়ের লোভে, জ্বালায় শহর, গ্রামে গ্রামে
প্রাচীন সংহতি ভেঙে ভগ্নস্তুপে দূরের উল্লুক
বাঁধে কেল্লা, (পারবে না, পারবে না,) পাপাশ্রয়ী পরজীবী
যতই লুন্ঠন করে শস্য পাট পণ্য, ঘরে ঘরে
ছড়ায় অমেয় শোক, ধর্মনাশ হত্যার ছায়ায়
ঘেরে আর্ত গৃহস্থালি, চতুর্গুন হিন্দু মুসলমান
বাংলার বাঙালি তত জানে জন্মমৃত্যুর বন্ধনে
অভিন্ন আপন সত্বা,

লক্ষ লক্ষ হা ঘরে দুর্গত
ঘৃণ্য যম-দূত-সেনা এড়িয়ে সীমান্তপারে ছোটে,
পথে পথে অনশনে অন্তিম যন্ত্রনা রোগে ত্রাসে
সহস্রের অবসান, হন্তারক বারুদে বন্দুকে
মূর্ছিত-মৃতের দেহ বিদ্ধ করে, হত্যা-ব্যাবসায়ী
বাংলাদেশ-ধ্বংস-কাব্যে জানে না পৌছল জাহান্নামে
এ জন্মেই;বাংলাদেশ অনন্ত অক্ষত মূর্তি জাগে।

জন্মেছি এই দেশে

সুফিয়া কামাল

অনেক কথার গুঞ্জন শুনি
অনেক গানের সুর
সবচেয়ে ভাল লাগে যে আমার
‘মাগো’ ডাক সুমধুর।
আমার দেশের মাঠের মাটিতে
কৃষাণ দুপুরবেলা
ক্লান্তি নাশিতে কন্ঠে যে তার
সুর লয়ে করে খেলা।
মুক্ত আকাশে মুক্ত মনের
সেই গান চলে ভেসে
জন্মেছি মাগো তোমার কোলেতে
মরি যেন এই দেশে।
এই বাংলার আকাশ-বাতাস
এই বাংলার ভাসা
এই বাংলার নদী, গিরি-বনে
বাঁচিয়া মরিতে আশা।
শত সন্তান সাধ করে এর
ধূলি মাখি সারা গায়
বড় গৌরবে মাথা উচু করি
মানুষ হইতে চায়।

জননী জন্মভূমি 

- সুভাষ মুখোপাধ্যায়

আমি ভীষণ ভালোবাসতাম আমার মা-কে
কখনও মুখ ফুটে বলি নি।
টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে কখনও কখনও কিনে আনতাম কমলালেবু
শুয়ে শুয়ে মা-র চোখে জলে ভ'রে উঠত
আমার ভালোবাসার কথা
মা-কে কখনও আমি মুখ ফোটে বলতে পারি নি।
হে দেশ, হে আমার জননী_
কেমন করে তোমাকে আমি বলি!

যে মাটিতে ভর দিয়ে আমি উঠে দাঁড়িয়েছি-
আমার দু-হাতের
দশ আঙুলে
তার স্মৃতি।

আমি যা কিছু স্পর্শ করি
যেখানেই,
হে জননী,
তুমি।

আমার হৃদয়বীণা
তোমারই হাতে বাজে।
হে জননী,
আমরা ভয় পাই নি।

যারা তোমার মাটিতে নিষ্ঠূর থাবা বাড়িয়েছে
আমরা তাদের ঘাড় ধরে
সীমান্ত পার করে দেব।


আমরা জীবনকে নিজের মতো করে।
সাজাচ্ছিলাম-
আমরা সাজাতে থাকব।
হে জননী,
আমরা ভয় পাই নি।

যজ্ঞে বিঘ্ন ঘটেছে বলে

আমরা বিরক্ত।
মুখ বন্ধ করে,
অকান্ত হাতে-
হে জননী,
আমরা ভালোবাসার কথা বলে যাব।।


Wednesday, 9 October 2013


ধনধান্য পুষ্প ভরা


দ্বিজেন্দ্র লাল রায়
ধনধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা
তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা
সে যে স্বপ্ন দিয়ে তৈরি সে দেশ স্মৃতি দিয়ে ঘেরা
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি
সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি।।
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা কোথায় উজল এমন ধারা
কোথায় এমন খেলে তড়িৎ এমন কালো মেঘে
ও তার পাখির ডাকে ঘুমিয়ে পড়ি পাখির ডাকে জেগে
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি
সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি।।
এত স্নিগ্ধ নদী কাহার কোথায় এমন ধুম্র পাহাড়
কোথায় এমন হরিৎ ক্ষেত্র আকাশ তলে মেশে
এমন ধানের উপর ঢেউ খেলে যায় বাতাস কাহার দেশে
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি
সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি।।
ধনধান্যে …………………………………জন্মুভূমি
পুষ্পে পুষ্পে ভরা শাখি কুঞ্জে কুঞ্জে গাহে পাখি
গুঞ্জরিয়া আসে অলি পুঞ্জে পুঞ্জে ধেয়ে
তারা ফুলের ওপর ঘুমিয়ে পড়ে ফুলের মধু খেয়ে।।
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি
সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি।।
ভায়ের মায়ের এত স্নেহ কোথায় গেলে পাবে কেহ
ওমা তোমার চরণ দুটি বক্ষে আমার ধরি
আমার এই দেশেতে জন্ম যেন এই দেশেতে মরি।।
এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি
সকল দেশের রাণী সে যে আমার জন্মভূমি
সে যে আমার জন্মভূমি, সে যে আমার জন্মভূমি।।

স্বদেশ 

- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।
চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি ॥
ও মা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রাণে পাগল করে,
মরি হায়, হায় রে--

ও মা, অঘ্রানে তোর ভরা ক্ষেতে আমি কী দেখেছি মধুর হাসি ॥
কী শোভা, কী ছায়া গো, কী স্নেহ, কী মায়া গো--
কী আঁচল বিছায়েছ বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে।
মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো,
মরি হায়, হায় রে--

মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়নজলে ভাসি ॥
তোমার এই খেলাঘরে শিশুকাল কাটিলে রে,
তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি।
তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যাকালে কী দীপ জ্বালিস ঘরে,
মরি হায়, হায় রে--

তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ও মা, তোমার কোলে ছুটে আসি ॥
ধেনু-চরা তোমার মাঠে, পারে যাবার খেয়াঘাটে,
সারা দিন পাখি-ডাকা ছায়ায়-ঢাকা তোমার পল্লীবাটে,
তোমার ধানে-ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে,
মরি হায়, হায় রে--

ও মা, আমার যে ভাই তারা সবাই, ও মা, তোমার রাখাল তোমার চাষি ॥
ও মা, তোর চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে--
দে গো তোর পায়ের ধূলা, সে যে আমার মাথার মানিক হবে।
ও মা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণতলে,
মরি হায়, হায় রে--

Languages
Carl Sandburg

There are no handles upon a language
Whereby men take hold of it 
And mark it with signs for its remembrance. 
It is a river, this language, 
Once in a thousand years 
Breaking a new course 
Changing its way to the ocean. 
It is mountain effluvia 
Moving to valleys 
And from nation to nation 
Crossing borders and mixing. 
Languages die like rivers. 
Words wrapped round your tongue today 
And broken to shape of thought 
Between your teeth and lips speaking 
Now and today 
Shall be faded hieroglyphics 
Ten thousand years from now. 
Sing—and singing—remember 
Your song dies and changes 
And is not here to-morrow 
Any more than the wind 
Blowing ten thousand years ago.



My Mother's Language

Abdellatif Laâbi

It's been twenty years since I last saw my mother
She starved herself to death
They say that each morning
she would pull her headscarf off
and strike the floor seven times
cursing the heavens and the Tyrant
I was in the cave
where convicts read in the dark
and painted the bestiary of the future on the walls
It's been twenty years since I last saw my mother
She left me a china coffee set
and though the cups have broken one by one
they were so ugly I didn't regret their loss
even though coffee's the only drink I like
These days, when I'm alone
I start to sound like my mother
or rather, it's as if she were using my mouth
to voice her profanities, curses and gibberish
the invisible litany of her nicknames
all the endangered species of her sayings
It's been twenty years since I last saw my mother
but I am the last man
who still speaks her language


My Mother Tongue


My mother tongue, so sweet the sound,
How dear you are to me!
Were my heart made of stone or steel,
To speak it proud I’d be.

You bend my stiff neck so gently
Like Mother with her arm.
You caress my lips and face
And I’m completely calm.

Again I feel like a little child:
The whole world disappears.
You breathe health into my sick breast
Like the winds of yester-years.

My grandpa folds my hands again
And says to me: “Now pray!”
An “Our Father” I then begin
Like in my childhood’s day.

My heart speaks and everything pours out,
Feeling deeply understood,
As heaven’s peace descends round about
And things again are good.

My mother tongue so simple and fair
Has a reverent air!
If someone merely said “my father,”
It sounded like a prayer.

For me no music or chorus is quite as glorious
Not even the nightingale’s grace.
In the twinkling of an eye, I just sigh,
As tears stream down my face.

© Klaus Groth