ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী
ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস থেকে প্রকাশিত রম্যপত্রিকা 'শার্লি হেবদো'র একটি ব্যঙ্গচিত্র নিয়ে কিছু ঘটনা ও অঘটন বিশ্বের প্রচারমাধ্যমগুলোর প্রধান সংবাদ শিরোনামে পরিণত হয়েছে। অতি সম্প্রতি পত্রিকাটির অফিসে সন্ত্রাসী হামলা ও হত্যাকা-ের জেরে জানা যায়, পত্রিকাটি মহানবী হজরত মুহাম্মদ মোস্তফা (সা.) কে নিয়ে একটি ব্যঙ্গচিত্র ছাপা নিয়ে কতিপয় অস্ত্রধারী পত্রিকার অফিসে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে নৃশংসভাবে ১২ জনকে হত্যা করে। এ ঘটনার পরপর জিম্মি নাটকের একটি ঘটনাও ঘটে এবং রক্তাক্ত পন্থায় এর অবসান হয়। স্বভাবতই এমন লোমহর্ষক ঘটনায় কেঁপে ওঠে গোটা ফ্রান্স, পশ্চিমা জগৎ ও বিশ্ব। ফরাসি প্রেসিডেন্টের আহ্বানে এ ঘটনার নিন্দায় লাখ লাখ লোকের প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা হয়। এ মিছিলে হত্যাকা-ের নিন্দায় শার্লির প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বহু মুসলমান অংশ নেয়ার দৃশ্য সিএনএনের দর্শকরা দেখেছে। মিছিলে যোগদানকারী ৪০ জন বিশ্বনেতার মধ্যে ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের মতো মুসলিম নেতারাও অংশ নিয়ে ফ্রান্সের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন। তারা বাস্তবে প্রমাণ দেন, কোনো সন্ত্রাসবাদী কর্মকা-ের সঙ্গে ইসলাম বা মুসলমানদের সম্পর্ক নেই।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ফরাসি নেতারা এবং পশ্চিমা মিডিয়া এ ঘটনাকে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাতে চাচ্ছে। তার একটি প্রমাণ_ ঘটনার পরপর শার্লি হেবদোর যে সংখ্যাটি প্রকাশ হলো, তাতে আবার মহানবী (সা.) কে ব্যঙ্গ করে কার্টুন ছাপা হয়েছে। নিঃসন্দেহে এ ধরনের পদক্ষেপ বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মুসলমানের হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করবে এবং তা ধর্মীয় বিদ্বেষ ও উত্তেজনাকে উসকে দিতে পারে। বলা হচ্ছে, ইরাক ও সিরিয়ায় যুদ্ধরত আইএসকে ব্যঙ্গ করার মানসে পত্রিকাটি এ কাজ করেছে। আমাদের প্রশ্ন হলো, আইএসকে কি বিশ্বের সব মুসলমান সমর্থন করে? আমাদের জানা মতে, বিশ্বের কোনো মুসলিম ফোরাম থেকে আইএসকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি বা তাদের কর্মকা-ের প্রতি কারও অনুমোদন নেই। তাহলে এর জন্য কেন মুসলিম উম্মাহকে দায়ী করা হবে। তদুপরি যেখানে আল্লাহর সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ পয়গম্বরকে দুনিয়ার সব জ্ঞানী-মনীষী একবাক্যে বিশ্ব ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ বলে স্বীকার করেন, সেখানে তাকে কেন আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হলো। আইএসের কর্মকা-ের জন্য তাকে কেন দায়ী করা হবে? অথচ তিনি দুনিয়ার বুকে এসেছিলেন আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে। এ ধরনের প্রশ্নের ক্ষেত্রে তারা বাকস্বাধীনতার কথা বলেন। অর্থাৎ পশ্চিমা সভ্যতায় নাকি প্রত্যেকের চিন্তা করা, লেখা ও কথা বলার অবাধ স্বাধীনতা আছে। কিন্তু স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে অন্যের প্রতি সীমা লঙ্ঘন কোন ধরনের স্বাধীনতা, তা আমরা বুঝি না। স্বাধীনতার তো একটা সীমারেখা থাকতে হবে। আপনি স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবেন। কিন্তু অন্যের অধিকার খর্ব করার স্বাধীনতা তো আপনি পেতে পারেন না। আত্মরক্ষার জন্য আপনি আগ্নেয়াস্ত্র বহন করতে পারবেন; কিন্তু এলোপাতাড়ি গুলি করে মানুষ হত্যা করার স্বাধীনতা আপনি পেতে পারেন না। এ সাদা কথাটুকু পশ্চিমা মিডিয়া, সভ্যতা ও বিবেক না বোঝার ভান করছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে। আপনি শারীরিকভাবে আঘাত করে কাউকে আহত করতে পারেন। আবার মানসিকভাবে আঘাত করেও আহত করতে পারেন। উভয় আঘাতই অন্যায় ও নিন্দনীয়। কারও সামনে দাঁড়িয়ে তার বাবা-মাকে গালমন্দ করলে সে যে আঘাত পাবে, তা শারীরিক আঘাতের চেয়ে অনেক বেশি মারাত্মক। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.), যাঁর সম্মান ও মর্যাদা প্রত্যেক মুসলমানের কাছে নিজের বাবা-মায়ের চেয়ে অনেক বেশি, তাঁকে যখন ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে সম্মানহানি করা হয়, তখন তার আঘাত মুসলিম বিশ্বের ওপর চতুর্মুখী আক্রমণ পরিচালনার চেয়েও মারাত্মক হতে পারে। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সব জ্ঞানী-মনীষী, শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি ও নেতা এবং বিশ্ববিবেককে এ ব্যাপারে জাগ্রত ও সোচ্চার হওয়ার জন্য আমরা আহ্বান জানাই। আমরা বিশ্বাস করি, এ ধরনের পরিস্থিতিতে মুসলমানদের যথেষ্ট কুশলী হতে হবে। কারণ পশ্চিমা বিশ্বের সাধারণ মানুষ যখন ব্যাপক হারে ইসলামের দিকে ঝুঁকছে, তখন তাদের ইসলামের প্রতি বীতশ্রদ্ধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে মহানবী (সা.) কে নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় উগ্রবাদী তৎপরতা চালালে তারা নতুন প্রচারণার সুযোগ নিয়ে বলে, এ হলো ইসলাম। ইসলাম মানে সন্ত্রাস। তখন এরা নিজেদের পক্ষে বিশ্বজনমতের সহানুভূতি আকৃষ্ট করার সুযোগ পেয়ে যায়।
আমরা ভেবে হতবাক হই, বিশ্বসভ্যতার রূপকার মহানবীকে (সা.) নিয়ে এহেন গর্হিত ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের বেলায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বা পশ্চিমা নেতাদের কোনো মন্তব্য প্রচারমাধ্যমে কেন এলো না। তার মানে গণতান্ত্রিক অধিকার ও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে কি মুসলামানদেরও বলা হচ্ছে, তারাও ইহুদি বা খ্রিস্টান ধর্মের প্রবর্তকের অবমাননা করে এর সমুচিত জবাব দিক? তা তো কিছুতেই হতে পারে না। কারণ মুসলমানদের কাছে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর যে সম্মান, মর্যাদা ও ভালোবাসা, ইহুদি সম্প্রদায়ের নবী মুসা (আ.) ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নবী ঈসা (আ) এর সম্মান ও মর্যাদা প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে তার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।
আসুন বিকারগ্রস্ত বিবেকের পচন রোধ করে মহামানব নবী-রাসূলদের আদর্শ, শিক্ষা ও মহানুভবতায় আলোকিত মহিমান্বিত সত্য ও সুন্দরের পথে এগিয়ে যাই। বিশ্বকে ধর্মীয় বিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িকতা, উত্তেজনা ও অশান্তির হাত থেকে রক্ষা করি।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে, ফরাসি নেতারা এবং পশ্চিমা মিডিয়া এ ঘটনাকে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের হাতিয়ার হিসেবে কাজে লাগাতে চাচ্ছে। তার একটি প্রমাণ_ ঘটনার পরপর শার্লি হেবদোর যে সংখ্যাটি প্রকাশ হলো, তাতে আবার মহানবী (সা.) কে ব্যঙ্গ করে কার্টুন ছাপা হয়েছে। নিঃসন্দেহে এ ধরনের পদক্ষেপ বিশ্বের প্রায় ২০০ কোটি মুসলমানের হৃদয়কে ক্ষতবিক্ষত করবে এবং তা ধর্মীয় বিদ্বেষ ও উত্তেজনাকে উসকে দিতে পারে। বলা হচ্ছে, ইরাক ও সিরিয়ায় যুদ্ধরত আইএসকে ব্যঙ্গ করার মানসে পত্রিকাটি এ কাজ করেছে। আমাদের প্রশ্ন হলো, আইএসকে কি বিশ্বের সব মুসলমান সমর্থন করে? আমাদের জানা মতে, বিশ্বের কোনো মুসলিম ফোরাম থেকে আইএসকে স্বীকৃতি দেয়া হয়নি বা তাদের কর্মকা-ের প্রতি কারও অনুমোদন নেই। তাহলে এর জন্য কেন মুসলিম উম্মাহকে দায়ী করা হবে। তদুপরি যেখানে আল্লাহর সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ পয়গম্বরকে দুনিয়ার সব জ্ঞানী-মনীষী একবাক্যে বিশ্ব ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ বলে স্বীকার করেন, সেখানে তাকে কেন আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা হলো। আইএসের কর্মকা-ের জন্য তাকে কেন দায়ী করা হবে? অথচ তিনি দুনিয়ার বুকে এসেছিলেন আজ থেকে ১৪০০ বছর আগে। এ ধরনের প্রশ্নের ক্ষেত্রে তারা বাকস্বাধীনতার কথা বলেন। অর্থাৎ পশ্চিমা সভ্যতায় নাকি প্রত্যেকের চিন্তা করা, লেখা ও কথা বলার অবাধ স্বাধীনতা আছে। কিন্তু স্বাধীনতার দোহাই দিয়ে অন্যের প্রতি সীমা লঙ্ঘন কোন ধরনের স্বাধীনতা, তা আমরা বুঝি না। স্বাধীনতার তো একটা সীমারেখা থাকতে হবে। আপনি স্বাধীনতা ভোগ করতে পারবেন। কিন্তু অন্যের অধিকার খর্ব করার স্বাধীনতা তো আপনি পেতে পারেন না। আত্মরক্ষার জন্য আপনি আগ্নেয়াস্ত্র বহন করতে পারবেন; কিন্তু এলোপাতাড়ি গুলি করে মানুষ হত্যা করার স্বাধীনতা আপনি পেতে পারেন না। এ সাদা কথাটুকু পশ্চিমা মিডিয়া, সভ্যতা ও বিবেক না বোঝার ভান করছে বলে আমাদের মনে হচ্ছে। আপনি শারীরিকভাবে আঘাত করে কাউকে আহত করতে পারেন। আবার মানসিকভাবে আঘাত করেও আহত করতে পারেন। উভয় আঘাতই অন্যায় ও নিন্দনীয়। কারও সামনে দাঁড়িয়ে তার বাবা-মাকে গালমন্দ করলে সে যে আঘাত পাবে, তা শারীরিক আঘাতের চেয়ে অনেক বেশি মারাত্মক। বিশ্বনবী হজরত মুহাম্মদ (সা.), যাঁর সম্মান ও মর্যাদা প্রত্যেক মুসলমানের কাছে নিজের বাবা-মায়ের চেয়ে অনেক বেশি, তাঁকে যখন ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করে সম্মানহানি করা হয়, তখন তার আঘাত মুসলিম বিশ্বের ওপর চতুর্মুখী আক্রমণ পরিচালনার চেয়েও মারাত্মক হতে পারে। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সব জ্ঞানী-মনীষী, শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি ও নেতা এবং বিশ্ববিবেককে এ ব্যাপারে জাগ্রত ও সোচ্চার হওয়ার জন্য আমরা আহ্বান জানাই। আমরা বিশ্বাস করি, এ ধরনের পরিস্থিতিতে মুসলমানদের যথেষ্ট কুশলী হতে হবে। কারণ পশ্চিমা বিশ্বের সাধারণ মানুষ যখন ব্যাপক হারে ইসলামের দিকে ঝুঁকছে, তখন তাদের ইসলামের প্রতি বীতশ্রদ্ধ করার অসৎ উদ্দেশ্যে মহানবী (সা.) কে নিয়ে ব্যঙ্গ-বিদ্রূপ করা হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় উগ্রবাদী তৎপরতা চালালে তারা নতুন প্রচারণার সুযোগ নিয়ে বলে, এ হলো ইসলাম। ইসলাম মানে সন্ত্রাস। তখন এরা নিজেদের পক্ষে বিশ্বজনমতের সহানুভূতি আকৃষ্ট করার সুযোগ পেয়ে যায়।
আমরা ভেবে হতবাক হই, বিশ্বসভ্যতার রূপকার মহানবীকে (সা.) নিয়ে এহেন গর্হিত ব্যঙ্গ-বিদ্রূপের বেলায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বা পশ্চিমা নেতাদের কোনো মন্তব্য প্রচারমাধ্যমে কেন এলো না। তার মানে গণতান্ত্রিক অধিকার ও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে কি মুসলামানদেরও বলা হচ্ছে, তারাও ইহুদি বা খ্রিস্টান ধর্মের প্রবর্তকের অবমাননা করে এর সমুচিত জবাব দিক? তা তো কিছুতেই হতে পারে না। কারণ মুসলমানদের কাছে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর যে সম্মান, মর্যাদা ও ভালোবাসা, ইহুদি সম্প্রদায়ের নবী মুসা (আ.) ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নবী ঈসা (আ) এর সম্মান ও মর্যাদা প্রতিটি মুসলমানের হৃদয়ে তার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।
আসুন বিকারগ্রস্ত বিবেকের পচন রোধ করে মহামানব নবী-রাসূলদের আদর্শ, শিক্ষা ও মহানুভবতায় আলোকিত মহিমান্বিত সত্য ও সুন্দরের পথে এগিয়ে যাই। বিশ্বকে ধর্মীয় বিদ্বেষ, সাম্প্রদায়িকতা, উত্তেজনা ও অশান্তির হাত থেকে রক্ষা করি।