Wednesday, 18 March 2015

সহিংসতা 

জামায়াত নিষিদ্ধ করা না-করা 

হরতালে চলমান সহিংসতার জন্য জামায়াত-শিবির অনেকাংশে দায়ী,হাইকোর্টের এক রায়ে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা এবং রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে ব্যাপকভাবে জড়িয়ে পড়ায় স্বাধীনতাবিরোধী এ দলটির রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জোরালো হয়ে উঠলেও এখন পর্যন্ত জামায়াতকে নিষিদ্ধ করা হয়নি বা হচ্ছে না। বিএনপিকে জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা বলা হলে বিএনপি নেতারা এখন উল্টো বলেন, সরকার কেন জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করছে না? সরকার জামায়াতকে নিষিদ্ধ করলেই তো বিএনপি আর তাকে নিয়ে জোটবদ্ধ রাজনীতি করতে পারবে না। গত বছর মার্চে মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক জুনের মধ্যেই সরকার যুদ্ধাপরাধী সংগঠন হিসেবে জামায়াত নিষিদ্ধ করতে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন। সেই জুন গিয়ে আরেক জুন আসছে। জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়টি ঝুলেই আছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেয়া রায়ে জামায়াতকে অপরাধী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠানে স্বাধীনতাবিরোধীদের স্থান না দিতে এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে যাতে তারা স্থান না পায়, তাও নিশ্চিত করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। কিন্তু সরকার এ পরামর্শ বিবেচনায় নিয়েছে তার কোনো প্রমাণ এখন পর্যন্ত নেই। জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার প্রশ্নে সরকার ও সরকারি দলের মধ্যে সম্ভবত মতৈক্য নেই। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ২০০৩ সালের আগস্টে বলেছিলেন, জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা সরকারের নেই।

সৈয়দ আশরাফের বক্তব্যের একদিন আগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, 'বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা সমর্থন করে না। রাজনীতিকে রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় মোকাবিলা করা উচিত।' রাজনীতিতে অন্য কোনো বিষয়ে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি একমত পোষণ না করলেও জামায়াত নিষিদ্ধের প্রশ্নে সৈয়দ আশরাফ এবং মির্জা ফখরুল প্রায় অভিন্ন মত প্রকাশ করে বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের অন্য নেতাদের বক্তব্য অবশ্য ভিন্ন। আওয়ামী লীগ নেতা ও মন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেছিলেন, উচ্চ আদালতে জামায়াতের নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করা জামায়াত নিষিদ্ধের প্রথম ধাপ। এখন আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে জামায়াত নিষিদ্ধ হবে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছিলেন, রাজনীতি কলুষমুক্ত করতে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ হওয়া জরুরি।

হাইকোর্ট জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল করলেও দল হিসেবে কার্যক্রম পরিচালনা নিষিদ্ধ না হওয়ায় সুযোগের পুরো সদ্ব্যবহার করছে জামায়াত। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে আপিল করে আইনি নিরাপত্তা নিয়ে তৎপর রয়েছে জামায়াত। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের শরিক হিসেবে জামায়াত সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসী কর্মকা-ে যথেষ্ট সক্রিয় রয়েছে। অন্যদিকে আপিল বিভাগের রায়ের অপেক্ষায় আছে সরকার। নির্বাহী আদেশে জামায়াত নিষিদ্ধ করার দায় না নিয়ে আদালতের মাধ্যমেই সমস্যাটির সমাধান করতে চায় তারা। এ অবস্থায় আশা ও আশঙ্কার দোলাচলে দুললেও হাত গুটিয়ে বসে নেই জামায়াত। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা হিসেবে তারা অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে আপিল করেছে। আবার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য দেশব্যাপী সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াতের কয়েকজন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে দন্ড ঘোষণার পর একদিকে জামায়াত-শিবির সারা দেশে ব্যাপক নৃশংসতা চালিয়েছে, অন্যদিকে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিলও করেছে। জামায়াত-শিবির হিংসাত্মক কর্মকা- চালিয়ে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচারের সম্মুখীন হওয়া দলীয় নেতাদের রক্ষা করতে চায়। আবার আইনি প্রক্রিয়ায় অংশ নিয়ে নানা অসিলায় বিচার প্রক্রিয়া বিলম্বিত করার দুরভিসন্ধিও তাদের রয়েছে। সরকার কঠোর অবস্থানে থাকলেও জামায়াত-শিবির হাল ছেড়ে দেয়নি বা দিচ্ছে না। জামায়াত-শিবিরের অনেক নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছেন, হচ্ছেন। অনেকেই আত্মগোপনে আছেন। তারপরও এটা বলা যাবে না, জামায়াতের সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। গত উপজেলা নির্বাচনে অংশ নিয়ে জামায়াত ভালো ফল করেছে।

জামায়াতের প্রধান মিত্র বিএনপির মধ্যেও জামায়াতকে নিয়ে কিছু হিসাব-নিকাশের খবর শোনা যায়। জামায়াতের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার জন্য দেশে-বিদেশে অনেকেই বিএনপিকে পরামর্শ দিলেও বিএনপি তা করছে না। তারা অপেক্ষায় আছে সরকার কী করে সেটা দেখার। জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ অথবা নিবন্ধন বাতিল এ দুইটির কোনোটিতেই বিএনপির কোনো ক্ষতি নেই বলে বিএনপির শীর্ষ নেতারা মনে করেন। তবে জামায়াত নিষিদ্ধ হলেই বিএনপির বেশি সুবিধা। দল হিসেবে টিকে থাকলে তারা থাকবে বিএনপির রাজনৈতিক মিত্র হিসেবে, আর নিষিদ্ধ হলে যে কোনো নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী না থাকায় জামায়াতের ভোট পাবে বিএনপি। জামায়াতের নেতাকর্মী-সমর্থকরা কখনোই আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে না। নিষিদ্ধ হলে অন্য কোনো দলের চেয়ে বিএনপিতেই জামায়াতের লীন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অন্য কোনো ধর্মভিত্তিক দলের সঙ্গে মিশে গেলে জামায়াতের রাজনীতি এক ধরনের ঝুঁকির মধ্যেই থাকবে। কিন্তু বিএনপিতে মিশলে তারা থাকবে ঝুঁকিমুক্ত। রাজনীতিতে যত প্রতিক্রিয়াশীল অবস্থানই গ্রহণ করুক না কেন, বিএনপিকে উগ্র সাম্প্রদায়িক দল হিসেবে মনে না করার মতো মানুষের সংখ্যা দেশে একেবারে কম নয়। জিয়াউর রহমানের 'মুক্তিযোদ্ধা' ইমেজ বিএনপিকে এক ধরনের বিশেষ সুরক্ষা দিয়ে থাকে।

আগেই বলা হয়েছে, জামায়াতকে নিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অবস্থানের মধ্যে কিছুটা ধোঁয়াশা আছে। আওয়ামী লীগের এ অবস্থান মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের প্রগতিশীল-অসাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো পছন্দ করে না। জামায়াতের সঙ্গে কৌশলের খেলা খেলে রাজনৈতিকভাবে আওয়ামী লীগের লাভবান হওয়ায় সম্ভাবনা নেই। জামায়াত এটা খুব ভালো করেই জানে যে, আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে তাদের লাভের চেয়ে লোকসানই হয়। তাই তারা আওয়ামী লীগ বা বর্তমান সরকারের কোনো ফাঁদে পা দেবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন না। রাজনৈতিক চাতুরিতেও জামায়াতের সঙ্গে আওয়ামী লীগ পেরে উঠবে না।

সে জন্যই জামায়াত-শিবিরের প্রশ্নে আওয়ামী লীগ তথা সরকারকে তার অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। যত দোদুল্যমানতাই দেখানো হোক না কেন, শেষ পর্যন্ত জামায়াতকে নিষিদ্ধ না করে সরকারের কোনো উপায় থাকবে না। সন্ত্রাস-সহিংসতার রাজনীতি থেকে জামায়াত কখনোই সরে আসবে না। এটা তাদের পুরনো বদঅভ্যাস। তবে এটাও ঠিক, জামায়াত-শিবিরকে শুধু আইনগতভাবে মোকাবিলা করতে চাইলে তাতে সাময়িক কিছু ফল পাওয়া গেলেও এ প্রক্রিয়ায় তাদের শিকড় উপড়ে ফেলা যাবে না। রাজনৈতিক-সামাজিক-অর্থনৈতিকভাবেও তাদের বিচ্ছিন্ন করার সর্বাত্মক পরিকল্পনা সরকারের থাকতে হবে। ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলে জামায়াত-শিবিরের কৌশল মোকাবিলা করতে হলে একমুখী তৎপরতায় ফল পাওয়া যাবে না। জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির প্রতি দেশের সাধারণ মানুষের তেমন সমর্থন নেই_ এটা আগে যতটা জোর দিয়ে বলা যেত, গত উপজেলা নির্বাচনের পর সেভাবে বলা যাচ্ছে কি? জামায়াত একেবারে জনবিচ্ছিন্ন এমনটা ভাবা সম্ভবত ঠিক নয়। নানা ধরনের অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা দেয়া থেকে শুরু করে বেহেশতি দরজা দেখানোর লোভ-প্রলোভনসহ নানা উপায়ে এরা মানুষের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে এবং এক্ষেত্রে যে তারা একেবারে ব্যর্থ নয়, তার প্রমাণও পাওয়া যাচ্ছে। তাই শুধু কথার ফানুস উড়িয়ে কিংবা আইনি ভয় দেখিয়ে জামায়াতকে জনবিচ্ছিন্ন করা যাবে না, সে জন্য দরকার সমন্বিত রাজনৈতিক উদ্যোগ ও কর্মপরিকল্পনা। জামায়াত-শিবিরের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী রাজনৈতিক-সামাজিক শক্তিকে একযোগে কাজ করতে হবে। শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে জামায়াত-শিবিরকে মোকাবিলা করলে তারা সাংগঠনিকভাবে হয়তো কিছুটা দুর্বল হবে; কিন্তু এভাবে তাদের জনবিচ্ছিন্ন কিংবা নির্মূল করা যাবে না। তাদের বিরুদ্ধে অব্যাহত আদর্শিক সংগ্রাম চালানোর পাশাপাশি সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে সব ধরনের বৈষম্য দূর করতে হবে।

ভুলে গেলে চলবে না, জামায়াত-শিবিরের কার্যপদ্ধতি অত্যন্ত সুপরিকল্পিত, সুচারু এবং সুসংগঠিত। পঁচাত্তর-পরবর্তী সময়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সেবা প্রতিষ্ঠান, ব্যবসা-বাণিজ্য, এনজিওসহ যে বিশাল আর্থিক-সামাজিক সাম্রাজ্য জামায়াত গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে, সমাজ ও রাজনীতিতে তার প্রভাব অস্বীকার করা বোকামি হবে। প্রকাশ্য এবং অপ্রকাশ্য সব ধরনের কাজের সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নেয়ার সক্ষমতা জামায়াত-শিবিরের রয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, আইনি প্রক্রিয়ায় নিষিদ্ধ হলেও মসজিদন্ড মাদরাসাকে কেন্দ্র করে এরা সক্রিয় থাকবে, সুযোগের অপেক্ষায় থাকবে এবং অনুকূল পরিস্থিতি পেলে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। যেমনটা তারা করেছিল মুক্তিযুদ্ধপরবর্তী সময়কালে। এটা মনে রাখতে হবে যে, দারিদ্র্য-বৈষম্য-পশ্চাৎপদ চিন্তাচেতনাই হলো জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির প্রধান ভিত্তি। সমাজে যদি ধনবৈষম্য না থাকে, বেকারত্ব না থাকে, কোনো মানুষ যদি শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত না থাকে, দেশে যদি ন্যায়বিচার, সুশাসন নিশ্চিত হয়, তাহলে জামায়াত-শিবির শুধু মৃত্যু-পরবর্তী সুখের স্বপ্ন দেখিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারবে না। সে জন্য জামায়াত-শিবিরকে কার্যকরভাবে মোকাবিলার পূর্বশর্ত হলো অর্থনৈতিক অগ্রগতি অর্জন এবং বৈষম্য কমিয়ে একটি সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার দিকে অগ্রসর হওয়া। দারিদ্র্য, অশিক্ষা, বেকারত্ব যতদিন থাকবে, ততদিন জামায়াতি রাজনীতির ভিত্তিও সমাজে থাকবে।

নীতি কথা শুনিয়ে জামায়াতকে যে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান থেকে সরানো যাবে না, সেটা না বোঝার কিছুই নেই। জামায়াত-শিবির কতটা হিংস্র ও পৈশাচিক হতে পারে তার প্রমাণ তারা একাত্তরে আলবদর-আলশামস বাহিনী গঠন করে বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের রাতের অন্ধকারে চোখ বেঁধে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে যেমন দিয়েছে, তেমনি স্বাধীন বাংলাদেশেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে রগ কেটে কিংবা ঠা-া মাথায় শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের খুন করার মাধ্যমেও নিয়মিতভাবেই দিয়ে আসছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্য কিংবা অতি সম্প্রতি ২০ দলীয় জোটের তথাকথিত আন্দোলনের নামেও জামায়াত দেখিয়ে যাচ্ছে যে, তারা কতটা অমানবিক ও বর্বর। পেট্রলবোমায় মানুষ পুড়িয়ে মারতেও তারা বিবেকের দংশন অনুভব করছে না। শান্তির ধর্ম ইসলামের নাম করে তারা অসংখ্য নিষ্ঠুর হত্যাকা- সংঘটিত করেছে।

ধর্ম এবং রাজনীতিকে একাকার করে জামায়াত-শিবির যে কত ধরনের অপকর্ম করতে পারে তার প্রমাণ তারা অব্যাহতভাবেই দিয়ে চলেছে। এ ফ্যাসিস্ট-সন্ত্রাসী শক্তিকে যারা রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে বা করার কৌশল নিচ্ছে তাদের সবাইকে একসময় চরম মূল্য দিতে হবে। জামায়াত-শিবির আন্তর্জাতিক জঙ্গি নেটওয়ার্কের সঙ্গে যে সম্পৃক্ত, তার তথ্যও এখন অজানা নয়। জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী এক ধরনের ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। পশ্চিমা শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো জঙ্গিবাদবিরোধী অবস্থানে আছে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকার দেশের অভ্যন্তরে জঙ্গিবাদের সহযোগী রাজনৈতিক শক্তির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগার কোনো যুক্তিসঙ্গত কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না। তবে এটা ঠিক, এ অপশক্তির বিরুদ্ধে অপরিকল্পিত ও বিচ্ছিন্ন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করে কোনো সুফল পাওয়া যাবে না। এদের আন্তর্জাতিক যোগাযোগ এবং প্রবল আর্থিক ভিত্তিও ভেঙে তছনছ করে দিতে হবে।

বিভুরঞ্জন সরকার : সাংবাদিক ও কলাম লেখক
ইমেইল : bibhu54@yahoo.com