পড়াই প্রথম বাণী । পড়ার সাথে সখ্যতা গড়ে তুলতে আমার প্রচেষ্টা । কবিতা আমার ভীষণ প্রিয় । Poetry touches my mind, moves me and makes me and forget self. তাই আমার প্রিয় কিছু কবিতা, প্রবন্ধ ও আরো কিছু বিষয় দিয়ে সাজিয়েছি আমার এ বর্ণমালার ঊচ্চারনের ব্লগ । এখানে বেড়াতে এসে যদি আপনার মনে সামান্য প্রশান্তির ছোঁয়া লাগে, তবে ভাববো আমার প্রচেষ্টা সার্থক হয়েছে ।
Tuesday, 24 March 2015
ইসলাম নামের অর্থ, তাৎপর্য ও গুরুত্ব
ইসলাম আরবি শব্দ। উৎপত্তিগত দিক থেকে মূল রূপটির অর্থ হলো যে কোনো ত্রুটি কিংবা ক্ষতিকর জিনিস থেকে মুক্ত থাকা। ইসলাম হচ্ছে মূল শব্দটির ক্রিয়া রূপ। এর অর্থ শান্তি ও নিরাপত্তার পরিবেশে প্রবেশ করা, যাকে আমরা আত্মসমর্পণ বলে বুঝিয়ে থাকি। এই ক্রিয়ার সক্রিয় বিশেষণ রূপ হলো মুসলিম, যা আত্মসমর্পণকারী বুঝিয়ে থাকে। একটি শব্দের মূলের দিকে তাকানো যে কত বেশি গুরুত্ব বহন করে, তা অনেকের কাছে হয়তো স্পষ্ট নয়। তবে আরবি ভাষায় এটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মনে হতে পারে ইসলাম মানে শান্তি। মুসলমানরা প্রায় সময়ই ইসলামের অর্থ এটাই করে থাকেন।
কোরান কারিমে ইসলাম ধর্মকে বোঝাতে ভিন্ন কয়েকটি পরিভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। এর একটি হলো ‘শান্তি’। এ প্রসঙ্গে ইরশাদ হচ্ছে, হে ইমানদাররা! তোমরা আল্লাহর দিকে শান্তির মধ্যে প্রবেশ কর পুরোপুরি। এখানে ‘আল সিল্্ম’ কথা দিয়ে ইসলামকে বোঝানো হয়েছে আর এটা যুদ্ধের বিপরীত। তাফসিরকারকদের অভিমত এটাই। অর্থাৎ ইসলামকে যেমন আত্মসমর্পণ বলা হয়, তেমনি বলা হয় শান্তি। এমন বহু নামে ইসলাম অভিহিত হয়ে থাকে। ইসলাম কেবল শান্তির ধর্ম নয়, ইসলাম জীবনেরও ধর্ম। এর মানে হলো এই সংকটপূর্ণ বিশ্বে আমাদের জীবনে যত ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটতে পারে, সব ক্ষেত্রেই ইসলাম দিকনির্দেশনা দিতে সক্ষম। কোরানে বহুবার ‘ইসলাম’ কথাটা এসেছে। সুতরাং ইসলাম নামটি একটি ঐতিহাসিক নাম। আল্লাহ তায়ালা কোরানে কারিমে ঘোষণা করেছেন, তার সমুদয় সৃষ্টিই তার কাছে আত্মসমর্পিত এবং একমাত্র প্রকৃত উপাস্যরূপে তার কাছেই মানবজাতি আত্মসমর্পণ করা উচিত। সর্বোত্তম ধর্ম হলো কারো মাথাকে আল্লাহর কাছে নত করা এবং ভালো কাজ করা।
একই পরিভাষা বারবার উল্লেখ করা হয়েছে নবী-রাসুলদের (আ.) কাহিনীতে। কোরানে উল্লিখিত ওইসব দৃষ্টান্ত থেকে দেখা যায়, আত্মসমর্পণের ধর্ম (ইসলাম) প্রকৃতির মাঝে যেমন প্রোথিত, তেমনি ইতিহাসে এর মূল নিহিত। যেমন কোরানে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর দৃষ্টিতে ধর্ম হলো ইসলাম’। ‘আজকের এ দিনে আমি তোমাদের জন্য তোমাদের ধর্মকে করে দিলাম পরিপূর্ণ এবং তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহগুলো সম্পূর্ণ করে দিলাম আর তোমাদের জীবনবিধান হিসেবে ইসলামকে নির্ধারণ করে দিয়েছি।’ ‘তার চেয়ে উত্তম কথা আর কার হতে পারে, যে ডাকে আল্লাহর দিকে, সৎ কাজ করে এবং বলে, আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।’
লেখক: মুফতি এনায়েতুল্লাহ, শিক্ষক ও কলামিস্ট