Saturday, 21 March 2015

সালাম বিনিময়ে সম্প্রীতি বাড়ে

সালাম অর্থ শান্তি। সালাম বিনিময়ের মাধ্যমে পরস্পর ভালোবাসা, সৌহার্দ্য-সম্প্রীতি সৃষ্টি হয়। সালাম ইসলামের নিদর্শন। সালাম দেয়া সুন্নাত আর সালামের জবাব দেয়া ওয়াজিব। মানে কোনো মুসলমান অপর মুসলমানকে সালাম দিলে এর উত্তর শুনিয়ে দিতে হয়। না দিলে গুনাহ হয়। যে আগে সালাম দেবে তার আমলনামায় ৯০টি নেকি লেখা হয় আর যে সালামের জবাব দেবে তার জন্য ১০টি নেকি লেখা হয়। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহম্মদ (সা.) ছোট-বড় সবাইকে সালাম দিতেন। কখনো তার আগে কেউ সালাম দিতে পারেনি। সাহাবায়ে কেরাম পরস্পরের সঙ্গে দেখা হলেই সালাম দিতেন। দেখা যেত পরস্পর সালাম বিনিময়ের পর একটি গাছের বা একটি দেয়ালের আড়াল হয়ে আবার দেখা হলে তখনো সালাম বিনিময় করতেন। রাসুলে করিম (সা.) সালামের প্রচলন বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি আরো বলেছেন, তোমাকে যদি কেউ সালাম দেয়, তার চেয়ে উত্তমরূপে সালামের জবাব দাও। অর্থাৎ কেউ যদি তোমাকে ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে সালাম দেয়, তাহলে তুমি এর সঙ্গে ‘ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ যুক্ত করে জবাব দেবে। যদি সে ‘আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ’ বলে সালাম দেয়, তাহলে তুমি এর সঙ্গে ‘ওয়া বারাকাতুহু’ যুক্ত করে সালামের উত্তর দেবে। এটা সালাম আদান-প্রদানের নিয়ম। মুসলমানদের পরস্পর কল্যাণ ও দোয়া কামনার জন্য এর চেয়ে উত্তম সম্বোধন আর কী হতে পারে। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহÑআপনার ওপর শান্তি ও রহমত বর্ষিত হোক। ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহুÑআপনার ওপরও শান্তি, রহমত ও বরকত বর্ষিত হোক। পরিচিত-অপরিচিত সব মুসলমানকে সালাম দিতে হয়। এ সালাম দুনিয়াতেও উত্তম বাক্য, জান্নাতেও উত্তম বাক্য। ফেরেশতারা জান্নাতিদের সালাম দেবেন। সালামের পর একটি আদব হলো মুসাফাহা করা। মুসাফাহা মানে হাত মিলানো। রাসুলে করিম (সা.)  বলেছেন ‘এক মুমিনের সঙ্গে আরেক মুমিনের দেখা হলে তারা যদি সালাম বিনিময় করে এবং মুসাফাহা করে, তাহলে তাদের গুনাহ গাছের পাতার মতো ঝরে যায়।’ আমরা কারো সঙ্গে কথা বলার আগে সালাম দিয়ে কথা বলা শুরু করব। কারণ রাসুলে করিম (সা.) কথা বলার আগে সালাম দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। সুতরাং আসুন আমরা ছোট-বড়, পরিচিত-অপরিচিত সবার সঙ্গে সালাম বিনিময় করে পরস্পর সম্প্রীতি বাড়াই। আর পরকালে তো এর জন্য প্রচুর সাওয়াব রয়েছেই।

লেখক: মাওলানা মুনীরুল ইসলাম, কবি ও গদ্যশিল্পী